একা খুশি থাকার উপায় , কথায় বলে নিজের ভালো নিজেকেই থাকতে হবে, মানুষ হিসাবে আমদের চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ একে অপরের থেকে ভিন্ন, মেন্টালি চিন্তা ভাবনা ভিন্ন, সোজা বাংলাই একেক জন একেক রকম, কেউ একা থাকতে পছন্দ করে কেউ মানুষের মাঝে থাকতে, কিন্ত আমাদের বেশিভার মানুষের দিন শেষে একা পড়ে যেতে হয়, তখন নিজেকে ভালো থাকার উপায় বেছে নিতে হয়।
একা খুশি থাকার উপায়
মানুষ প্রাকৃতিক নিয়মে, একে অপরের সাথে মিলে থাকার জন্য, কিন্ত একা থাকা বলতে আমরা নিজের জন্য যে সময়য় টুকু পায় সেই সময়কে বোঝানো হয়েছে, নিজেকে নিয়ে ভাবার নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার, সেই সময়টুকুতে আমরা প্রিয়জের সাথে কথাও বলতে পারি, বা মুভি দেখতে পারি, ইত্যাদি,
একা খুশি থাকার কিছু সাইকোলজিকাল থিওরি আছে, কিছু গবেষণা আছে যেটা দ্বারা প্রমাণিত যে মানুষ একা খুশি থাকতে পারে, আমরা অনেক সময় বন্ধুদের কাছে নিজের অনেক কথা শেয়ার করতে পারিনা , আর পরিবারের কাছে আমাদের মনের কথা বলা যায়না তবে আমরা চাইলে কোথাও হাটতে পারি, প্রকৃতির মাঝে মিশতে পারি।
একা সুখি থাকার সহজ করি টিপস, আপনি এই গুলো মেনে চললে আপনার নিজের উপর আত্মবিশ্বাস জন্মাবে।
অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করা যাবেনা
একা খুশি থাকার উপায় আমরা নিজের যেমন তেমনই ভালো আছি, অপরের সাথে নিজেকে তুলনা করা মানে নিজেকে ছোট করা আপনি নিজেকে নিয়ে ভাবুন, কে ফেসবুকে পপুলার কে সুখী দেখাচ্ছে এটা নিয়ে ভাবার দরকার নেই, আপনিও সেরা আপনি শো-অফ করেন না বাকিরা করে পার্থক্য এখানে।
আপনি অপরকে নিয়ে না ভেবে সেই সময়টুকু নিজের আনন্দের পিছনে ব্যয় করেন, আপনি যদি কোন মুভি দেখতে ইচ্ছে হয় দেখুন, অপরকে নিয়ে ভবে নিজেকে ছোট মনে করবেন না।
সমুদ্র সৈকত অথবা পাহাড় দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া
একা খুশি থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে নিজেকে ভ্রমণপিপাসু হিসেবে উপলব্ধি করা। আর এজন্যে আপনি দূরে কোথাও সমুদ্রসিতার অথবা পাহাড় দেখতে বের হতে পারে। নিজের সঙ্গীহীন নিঃসঙ্গতা কাটাতে যদি আপনি সমুদ্র সৈকতে যান, সমুদ্রের বিশালতা দেখে কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনার নিঃসঙ্গতা নিশ্চিহ্ন হবে। কলকাতাকে নিঃসঙ্গতা কাটানোর সবচেয়ে চমৎকার পদ্ধতি হলো সমুদ্র সৈকতে বলতে পারলে দূর থেকে আসড়ে পড়া ঢেউয়ে পা ভেজানো। এটা একটি চমৎকার অনুভূতি।
এছাড়াও সমুদ্র সৈকতে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন আকৃতির রংবেরঙের ঝিনুক আপনার মনকে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও পুলকিত করবে। এভাবে করে একা খুশি থাকার আরো একটি ভালো উপায় দূরে কোথাও পাহাড়ি ভ্রমণে বের হওয়া। সেখানে পাহাড়ি এলাকার বিচিত্র জীবন যাপন, চারিদিকে প্রকৃতির সীমাহীন সৌন্দর্য আপনার মনে এক ধরনের প্রশান্তি এনে দিবে। যা আপনার একা খুশি থাকার অনুভূতিকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে। এভাবে সমুদ্র সৈকত অথবা পাহাড় দূরে কোথাও ভ্রমণে গিয়ে একা খুশি থাকা যায়।
নিজের মনকে সময় দিতে হবে
আপনার মনকে সময় দিতে, আপনার যদি কোলাহল মুক্ত কোথায় হেটে বেড়াতে ইচ্ছে হয় তবে তাই করতে হবে, একা হাটতে বের হতে পারেন, এতে করে নিজের মনকে শান্ত করতে পারবেন, কোনো পছন্দের জাইগা থাকলে হেটে আসুন, আপনি চাইলে ফুল গাছ লাগাতে পারেন, গাছ লাগলে মন ভালো থাকে আপনি আজ থেকেই বাড়িতে ফুল গাছ লাগানো শুরু করেন।
সিনেমা, বই, গানে কিছু সময়য় দিতে পারেন
আপনি একা থাকতে পছন্দ করেন তাহলে সিনেমা দেখে সময়য় কাটাতে পারেন এটা একটা সুস্থ্য বিনোদনের মাধ্যম, আপনি যদি বই পড়তে ভালোবাসেন তাহলে বই পড়ে সময়য় কাটান কিছু সময়, গান মানুষের মনকে শান্ত রাখে, আপনি চাইলে গান শুনতে পারেন, এসব কিছু আপনাকে ভালো লাগা এনেদিতে পারে।
মানুষের মন ভালো রাখার অন্যতম উপায় হলো কুকুর বা বিলারের সাথে সময় কাটানো তারা আপনাকে ভালোবাসবে।
প্রকৃতির মাঝে সময়য় কাটানো
প্রকৃতির মাঝে সময়য় কাটালে যে কারোমন ভালো হতে বাধ্য, কোন সবুজের মাঝে ঘুরে আসতে পারেন, মাঝেমধ্যে ঘুরে আসতে পারেন সবুজে ঘেরা পার্ক বা বন, পাহাড়ের কাছ থেকে, বাংলাদেশে অসংখ্যা ট্যুর করার জাইগা আছে আপনি সময়য় নিয়ে ঘুরে আসুন সে সব জাইগা থেকে।
সোশাল মিডিয়া থেকে সমসাময়িক দুরে থাকা
এ কথা সত্য, ফেসবুক, টুইটার আমাদেরকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে সেটা ছেড়ে থাকা সম্ভবনা, আমাদের দরকার মাঝে মাঝে এসব থেকে কিছুদিনের জন্য দুরে থাকে, আমাদের হতাশার করাণ হয়ে দেখা দেই এইসব ফেসবুক।
খেলাধুলা ব্যায়ামে সময় দেওয়া
আমারা বড় হওয়ার সাথে সাথে খেলাধুলা থেকে দুরে সরে গেছি, আমরা ব্যায়াম করাও সময় পাইনা অথচ আমাদের হাতে অঢেল সময় থেকে যায় আমাদের উচিত, খেলাধুলাই সময়য় দেওয়া, বিকালে হেটে বেড়ানো শরীর চর্চার অংশ আপনি চাইলে প্রতিদিন বিকালে হেটেচলে বেড়াতে পারেন।
নিজের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দেওয়া
ভালো থাকার অন্যতম উপায় হলো আপনার ভালো লাগাগে গুরুত্ব দিতে হবে, আপনি যদি ছবি আঁকতে পছন্দ করেন তাহলে সেটাতে সময় দিন, কারো কথা শুনে আপনি আপনার ভালো লাগাটা বদলাতে যাবেন না, তাহলে সেটা আপনার মানসিক প্রেশার দিতে পারে। নিজেকে শুনুন নিজের মন কি চাই ।
একা খুশি থাকার উপায় এবং আপনাদের প্রশ্ন
আপনি একা থাকতে পারেন ভালো থাকতে পারেন, যদি এই ব্যাপার গুলো মাথায় নিয়ে চলেন আমাদের সকলের এই ব্যাপার গুলোতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, আপনি মুভি দেখেন, গাছ লাগান অথাব কোথাও ঘুরে আসুন সব কিছু নিজেকে ভালো রাখার জন্য। আর উপরের এ ব্যাপর নিজে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
ধর্মীয় একাগ্রতা একা খুশি থাকার অন্যতম উপায়
একা খুশি থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে ধর্মীয় একাগ্রতা। পৃথিবীর যেকোনো ধর্ম মানুষকে সংযমী, শান্ত হতে শেখায়। পৃথিবীর সকল ধর্মই মানুষকে লোভ, হতাশা, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকতে শেখায়। ফলে কেউ যদি টাকা খুশি থাকতে চাই তাহলে অবশ্যই তাকে ধর্মীয় একগ্রতা বাড়াতে হবে। ধর্ম প্রত্যেক মানুষের জীবনের একটি কমল স্পর্শকাতর জায়গা। পৃথিবীতে মানুষ যত হিংস্র হোক না কেন ধর্মের প্রশ্নে সে দুর্বল হবেই। তাই যদি একা খুশি থাকতে চান তাহলে সবার আগে নিজের ধর্মীয় অনুভূতি বাড়ান।
এই ধরেন হিন্দু ধর্মে ঈশ্বরের পূজা করলে মনে এক ধরনের প্রশান্তি কাজ করে একইভাবে ইসলাম ধর্মে যে মৌলিক ইবাদতগুলো রয়েছে যেমন রোজা রাখা, নামাজ পড়া, কুরআন তেলাওয়াত করা ইত্যাদি মানুষের মনে এক ধরনের প্রশান্তি কাজ করে। তাছাড়াও এসকল ধর্মীয় কাজ মেনে চলতে গেলে আপনাকে অবশ্যই ভিন্ন পন্থার সঙ্গী ত্যাগ করতে হবে ফলে একা থাকাটা আপনার জন্য আপনা আপনি সহজ হয়ে যাবে। এভাবে ধর্মীয় অনুভূতি একাগ্রতা আপনাকে একা খুশি থাকাতে সাহায্য করবে।
একা খুশি থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় বই পড়া
যদি আপনি নিঃসঙ্গতায় ভুগেন তাহলে আপনার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারে বই। বলা হয়ে থাকে একটা বই একশত বন্ধুর সমান। সুতরাং একা খুশি থাকতে গেলে আপনাকে সবার আগে বই পড়ার অভ্যাস করে তুলতে হবে। নিজেকে ভালো রাখার জন্য বই পড়ে নিঃসঙ্গতা কাটাতে গেলে আপনাকে অবশ্যই ভালো এবং মানসম্পন্ন রাইটারের কিছু বই সংগ্রহ করতে হবে। সেটি হতে পারে কোন গল্প, উপন্যাস অথবা সায়েন্স ফিকশন।
বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার প্রিয় বিষয়কে প্রায়োরিটি দিবেন। এই ধরেন আপনি গল্প বা উপন্যাস করতে পছন্দ করেন, সে ক্ষেত্রে আপনি যে গল্প বা উপন্যাসটি পড়বেন তার চরিত্রগুলো আপনার অনেক কাছের মনে হবে। গল্পটি বা উপন্যাসটিতে পরবর্তী চিত্রে কি ঘটতে যাচ্ছে তা জানতে আপনার মনে এক ধরনের ব্যাকুলতা কাজ করবে। যার ফলে খুব সহজেই আপনি আপনার নিঃসঙ্গটা কাটাতে পারবেন। এভাবে করে বই পড়ে খুব সহজেই একা খুশি থাকা যায়।
নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলা একা খুশি থাকার অন্যতম উপায়
যদি আপনি একা খুশি থাকতে চান তাহলে সবার আগে নিজেকে একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। নিজের কাজের উপর সর্বদা বিশ্বাস রাখতে হবে। জীবনে যাই হোক ধারণা রাখতে হবে আমি পারবো এবং আমিই পারব। কেননা আত্মবিশ্বাস ছাড়া মানুষের জীবন বদ্ধ হৃদের মত যেটা দীর্ঘদিন থাকলে দুর্গন্ধ ছড়ায়।
নিজেকে আত্মবিশ্বাসই করে গড়ে তুলতে গেলে সবার আগে নিজের কাজকে প্রায়োরিটি দিতে হবে। কোন সময় আশা হারালে চলবে না। এভাবে করে নিজের কর্ম ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করে আত্মবিশ্বাস এর ভিত্তি গড়ে তোলা যায় যেটি একা খুশি থাকার সবচাইতে বড় উপায়।
কর্মজীবনে নিজেকে ব্যস্ত রেখে একা খুশি থাকা যায়
একা খুশি থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে নিজেকে নিজের কর্ম ক্ষেত্রে সর্বদা ব্যস্ত রাখা। এতে করে আপনার নিঃসঙ্গতা খুব সহজে কাটাতে পারবেন। নিজেকে কর্ম ক্ষেত্রে ব্যস্ত রাখলে এর সাথে সাথে আরো একটি উপকারের দিক হলো আপনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন যেটি আপনাকে আত্মবিশ্বাস হতে সাহায্য করবে।
তবে নিজেকে কর্ম ক্ষেত্রে ব্যস্ত রেখে খুশি থাকার সবচেয়ে বড় শর্ত হলো অবশ্যই কর্মক্ষেত্র টি আপনার পছন্দের হতে হবে তা না হলে আপনি কর্ম ক্ষেত্রে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে সফল হবেন না। তাই বলা যায় পছন্দের কর্মক্ষেত্রে নিজেকে ব্যস্ত রেখে একা খুশি থাকার একটি অন্যতম উপায়।
আরো পড়ুন: দ্রুত মন ভালো করার ১০ উপায়
( সবার আগে সঠিক তথ্য পেতে ফলো করুন আমাদের Google News, পেজ)